বাচ্চাদের মায়োপিয়ার আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি: বাবা-মায়েরা কী জানা দরকার

আগে টিভি বেশি দেখলে চশমা লাগবে - এই কথা শুনে শুনে আমরা বড় হয়েছি। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। নতুন এক চিন্তা আমাদের সবার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে: বাচ্চাদের মায়োপিয়া বা দূরদৃষ্টির সমস্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি। এই বিষয়ে বাবা-মায়ের সচেতনতা খুবই জরুরি। এই লিঙ্কটি ব্যবহার করে সানগ্লাস কিনুন - https://amzn.to/3STM8cj

Source: AllAboutVision

এই লিঙ্কটি ব্যবহার করে সানগ্লাস কিনুন - https://amzn.to/3STM8cj

সংখ্যা কথা বলে:

গত ২০ বছরে ভারতের বাচ্চাদের মধ্যে মায়োপিয়ার প্রবণতা ৪৫% থেকে বেড়ে ৬১% এর বেশি হয়েছে। এই চাঞ্চকর পরিসংখ্যান পরিস্থিতির গুরুত্বকে তুলে ধরে।

মায়োপিয়া বোঝা:

মায়োপিয়া হয় যখন চোখের বলটি অতিরিক্ত দীর্ঘায়িত হয়, ফলে আলো রেটিনায় না পড়ে তার সামনে ফোকাস করে। এর ফলে দূরের জিনিস ঝাপসা দেখা যায়। সাধারণত রেটিনায় আলো ফোকাস করে, তাই আমরা পরিষ্কার দেখতে পারি।

কারণ ও চিন্তা:

মায়োপিয়ার সঠিক কারণ এখনও বিতর্কিত, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব হলো:

  • নিকট দৃষ্টি কার্যকলাপ তত্ত্ব: কাছাকাছি জিনিসে (স্ক্রিন বা বই) বেশি সময় ফোকাস করার কারণে সমস্যা হতে পারে।
  • ডোপামিনের অভাব: রেটিনায় ডোপামিন উৎপাদন কম হলে চোখ অতিরিক্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে।
  • জিনগত: মায়োপিয়ার পারিবারিক ইতিহাসও ভূমিকা রাখতে পারে।

সূর্যালোকের শক্তি:

এবার ভালো খবর? চোখে উজ্জ্বল আলো পড়লে ডোপামিন উৎপাদন হয়, যা চোখের বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এখানেই বাইরে খেলার গুরুত্ব বেশি।

তাইওয়ানের উদাহরণ:

তাইওয়ানের "টিয়ান-টিয়ান আউটডোর ১২০" প্রোগ্রামে প্রতিদিন বাচ্চাদের ২ ঘণ্টা বাইরে থাকতে হতো, ফলে মায়োপিয়ার হার কমেছিল। এটি সূর্যালোকের গুরুত্বকে তুলে ধরে।

কী করবেন:

একজন বাবা-মা হিসেবে আপনি কী করতে পারেন:

  • বাইরে খেলার সুযোগ দিন: প্রতিদিন কমপক্ষে ২ ঘণ্টা বাইরে খেলার চেষ্টা করুন।
  • স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন: ভিডিও গেমস এবং কম্পিউটারের মতো স্ক্রিন কার্যকলাপের উপর যুক্তিসঙ্গত সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করুন।
  • নিয়মিত চোখ পরীক্ষা: আপনার সন্তানের দৃষ্টি পর্যবেক্ষণ এবং মায়োপিয়া শনাক্ত করার জন্য নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করান।
  • ডাক্তারের সাথে কথা বলুন: আপনার সন্তানের দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে উদ্বেগ থাকলে তাদের শিশু বিশেষজ্ঞ বা চক্ষু বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করুন।

এই লিঙ্কটি ব্যবহার করে সানগ্লাস কিনুন - https://amzn.to/3STM8cj

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:

  • নিকট দৃষ্টি কার্যকলাপে বিরতি নিন: কাছাকাছি জিনিসে ফোকাস করার সময় (বই পড়া, গেমস খেলা, মোবাইল ব্যবহার) মাঝে মাঝে বিরতি নিন।
  • আলোকিত পরিবেশে কাজ করুন: অস্পষ্ট আলোতে পড়াশোনা বা কাজ করা এড়িয়ে চলুন।
  • চোখের ব্যায়াম করুন: চোখের ব্যায়াম রেটিনাকে শক্তিশালী করতে এবং চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • সুষম খাবার দিন: ভিটামিন এ, সি, ই এবং লুটেন সমৃদ্ধ খাবার সন্তানের চোখের জন্য উপকারী।

চিকিৎসাগত ব্যবস্থা:

  • LASIK সার্জারি: এটি একটি লেজার চিকিৎসা যা কর্নিয়ার আকৃতি পরিবর্তন করে স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরিয়ে আনতে পারে। তবে, এটি একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি এবং শিশুদের জন্য সবসময় উপযুক্ত নাও হতে পারে।
  • বিশেষ ধরনের আইড্রপ এবং লেন্স: অর্থোকেরাটোলজি লেন্সের মতো বিশেষ ধরনের লেন্স মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীরগতিতে সাহায্য করতে পারে। তবে, চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই এগুলো ব্যবহার করা উচিত।

শেষ কথা:

মায়োপিয়া একটি অপরিবর্তনীয় সমস্যা, তবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে এর অগ্রগতি থামানো যায়। বাবা-মায়ের সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া সন্তানদের সুস্থ দৃষ্টি নিশ্চিত করতে পারে।

এই লিঙ্কটি ব্যবহার করে সানগ্লাস কিনুন - https://amzn.to/3STM8cj

এছাড়াও মনে রাখবেন:

  • প্রতিরোধই সর্বোত্তম। উপরোক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি চোখের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সন্তানদের সচেতন করাও গুরুত্বপূর্ণ।
  • কোনো চিকিৎসাগত পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অবশ্যই চোখের চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
  • মায়োপিয়ার সমস্যা এখন আর দূরের কোনো বিষয় নয়। আমাদের সবার সচেতনতা এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করা জরুরি, যাতে আমাদের আগামী প্রজন্ম সুস্থ দৃষ্টি নিয়ে পৃথিবী দেখতে পারে।

আশা করি, এই ব্লগটি আপনাকে সাহায্য করবে। আপনার মতামত ও অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানাতে পারেন।

Comments